May 25, 2025, 8:16 pm
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার গাঢ়ুদহ নদীটি এক শ্রেণীর প্রভাবশালীদের অবৈধ দখল আর দুষণের কবলে পড়েছে।নদী খনন না করা আর অব্যবস্থাপনার কারনে নদীটির নাব্যতা প্রায় হারিয়েই ফেলেছে। নদীর পশ্চিম পাড় জুড়ে অবৈধ দখলদারিত্বের প্রতিযোগীতা বেড়েই চলেছে।নদীর পাড়ে পাইলিং করে জায়গা দখল নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ চলছে নির্বিকারে।গৃহস্থালী ও সলঙ্গা বাজার-হোটেলের পঁচা-বাশি ও বর্জ্য ফেলে নদীর পানি দুষিত করা হচ্ছে। ফলে গাঢ়ুদহ নদীর পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন,এক সময় গোসল,কাপড় ধোয়া,থালা-বাসন পরিস্কারসহ গৃহস্থালীর সব কাজে এ নদীর পানি ব্যবহার হত।কিন্ত দুষণ মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এ নদীর পানি আর ব্যবহার করা যায় না।সলঙ্গার স্লুইচ গেটের রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার জন্য গার্লস স্কুল,বালক প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়,ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়,শহীদ একাডেমী,মোস্তফা প্রি-ক্যাডেট স্কুল, আদর্শ কেজি স্কুল, সলঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসা,সলঙ্গা ডিগ্রী কলেজ,সলঙ্গা মহিলা কলেজ,হাফিজিয়া মাদ্রাসা,সাব রেজিস্ট্রি সমিতি,কেন্দ্রিয় জামে মসজিদের মুসুল্লীদের নামাজ আদায়সহ বাজারের ক্রেতা বিক্রেতাদের প্রবেশের এই রাস্তাটি দুষণের কারনে যাতায়াতে করুণ অবস্থা।যা চোখে না দেখলে বিশ্বাস যোগ্য নয়।অথচ গাঢ়ুদহ নদীর ধারে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলে স্লুইচ গেটসহ নদীর পশ্চিম পাড় পুরো এলাকা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে তৈরি করেছে দোকান পাট,সেলুন ঘর,পোল্ট্রি ব্যবসা,স্টিলের দোকান,মুদি খানা,মোবাইল দোকান,স মিলসহ আবাসিক ভবণ।স্থানীয় প্রভাবশালী ও ভুমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে জাল কাগজমুলে নদীর পশ্চিম পাড় দখলে নিয়ে অনেকেই ভবন ও আধা পাকা দোকান ঘর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় অনেকেই অভিযোগ করেন,নদীর পশ্চিম পাড়ে গড়ে তোলা এ সব ভবণের মালিক হচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।তবে নদী দখলের কথা অস্বীকার করেন কতিপয় ঘর মালিকরা।তারা বলেন,আমাদের পৈত্রিক/কেনা জায়গার উপর ভবণ ও ঘর নির্মান করেছি।জমির সকল প্রকার বৈধ কাগজ রয়েছে বলেও তারা দাবী করেন।সলঙ্গার অনেক বয়োজেষ্ঠ মুরুব্বীরা জানান,এক সময় গাঢ়ুদহ নদীর বুকে পাল তোলা পণ্যবাহী সারি সারি নৌকা যাতায়াত করত।অব্যবস্থপনার কারণে সেই নদীটি এখন মরা খাল।এ সব অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত তো দুরের কথা মানুষ ও ভ্যান রিক্সার ভিড়ে সাধারন পথচারীদের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। স্লুইচ গেটের পশ্চিম ধারে পোল্ট্রি জবাই করা রক্ত,হাটের বর্জ্যের দুর্গন্ধে এমন কোন লোক নাই যে, মুখে রুমাল চেপে ধরে না।শুধু তাই নয়,স্লুইচ গেট হতে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তার ধারে হাটের সব বর্জ্য ফেলায় চলাচল মোটেও স্বাস্থ্য সম্মত নয়।অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এ সব দোকান মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সলঙ্গার অনেক প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক দলের লোকজন নদীর পাড় দখল করে স্থাপনা নির্মান করে আমাদের মত ক্ষুদ্র দোকানদার / ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন।আমরা গরিব মানুষ,ব্যবসার কোন জায়গা না পেয়ে এসব ঘর ভাড়া নিয়ে মাসে মাসে তাদেরকে ভাড়া দিয়ে থাকি।সরকারি সম্পদ দখলমুক্ত করণের আইন থাকলেও প্রশাসনের নজরদারির অভাব ও আইন প্রয়োগ না করায় প্রভাবশালীরা দখল করছে নদীর পাড়।কেউ কেউ দখল করে নদীর ভিতরে পুকুর খনন ও আবাদও করছে।
গাঢ়ুদহ নদীটি খনন ও নদীর পশ্চিম পাড় অবৈধ দখলদারমক্ত করতে সলঙ্গার সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ন কবীর জানান,পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশ পেলে অবৈধ নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।